ঢাকা, শনিবার   ০৩ মে ২০২৫

যে কারণে চিন্ময় দাসের জামিন শুনানিতে আইনজীবী ছিলেন না 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১৯:৪৭, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনি জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর গত ২৬শে নভেম্বর চট্টগ্রামের সিএমএম কোর্ট জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে চিন্ময় দাসের অনুসারীদের বিক্ষোভের মুখে ওইদিন তাকে আদালত থেকে কারাগারে নিতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে।

এক পর্যায়ে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। আহত হন অন্তত ৩০ জন।

ওইদিনই চিন্ময় দাসের আইনজীবীরা এ আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করে জামিন চায়। কিন্তু সেদিন শুনানি হয়নি। তেসরা ডিসেম্বর শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছিল।

ওইদিন বিকালে আইনজীবী আলিফ নিহতের বিষয়টি জানাজানি হলে পরবর্তী দুই দিন কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেয় চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি।

এসব প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে চিন্ময় দাসকে সব মামলায় আসামি করার দাবি জানানো হয়।

আবার আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকেও আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়াতে আহ্বান জানানো হয়। আইনজীবীদের গ্রুপেও এ বিষয়ে পোস্ট দেওয়া হয়।

পরে পহেলা ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম আদালতের স্বাভাবিক বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর জানা যায় দাসের জামিন শুনানির দিন তেসরা ডিসেম্বর মঙ্গলবার।

কিন্তু রোববার পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে করা এক মামলায় একজন আসামি মুফতি আহমদ হোসাইনের আইনজীবী কাজী মফিজুর রহমান ওকালতনামা জমা দিয়ে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। কারণ হিসেবে জানা যায়, এ ঘটনার কোনো মামলায় আইনজীবীদের না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনজীবী সমিতি।

এ বিষয়ে ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, যেহেতু ঐ তিন মামলায় ওকালতনামা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তাহলে আমি ঐ ওকালত নামার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি এবং প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।

তিনি বলেন, জামিন চাওয়া যদি অপরাধ হয় আমি বারের পেইজে বলছি যে তাহলে আমি জামিন চাইব না , প্রত্যাহার করে নিব।ওকালত নামা দেওয়াটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। বাংলাদেশের বার কাউন্সিলের রুলসে আছে। কেউ বাধা দেয় নাই, আজকে সকালে ফেসবুকে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে যে আমি আলিফ হত্যা মামলার মধ্যে ওকালতনামা দিয়েছি। 

কাজী মফিজুর বক্তব্য অনুযায়ী, নিহত আইনজীবী আলিফ তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই। স্বার্থান্বেষী মহল এ বিষয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। কারণ যে মামলায় আসামির পক্ষে তিনি আইনজীবী হতে গিয়েছেন সেটি পুলিশের করা মামলা। আলিফ হত্যা মামলা পৃথক আরেকটি মামলা।

তিনি বলেন, যেহেতু পুলিশের ওই মামলায় অজ্ঞাত ২১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় একজন সিনিয়র অ্যাডভোকেট কাইয়ুম জেল খাটতেছে দশ দিন। তাহলে আমি আপনি কেউতো এখানে নিরাপদ না। এগুলা-তো আলিফ হত্যা মামলা না।

তিনি আরও জানান, আইনজীবী হত্যা মামলায় সবাই হিন্দু আসামি, মুসলিম নেই। আর পুলিশের করা ভাঙচুর মামলায় চিন্ময় দাসকে আসামিও করা হয় নাই বলে জানান তিনি।

২৬শে নভেম্বরের ঘটনায় যেসব মামলা হয়েছে তাতে আসামিদের পক্ষে না দাঁড়াতে এক ধরনের চাপ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে এই আইনজীবী বলেন, অবশ্যই, অবশ্যই। না হলে বার কাউন্সিলের রুলস অ্যান্ড অর্ডারের মধ্যে একজন আইনজীবী আসামির পক্ষে ওকালতনামা দেবে এটা স্বাভাবিক। মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। আমিই নিরাপদ না, আমার স্ত্রী, আমার বউ, আমার বাচ্চা নিরাপদ না।

পুলিশের কাজে বাধাদানের এসব মামলায় ভিডিও দেখে শনাক্ত করে আসামি করতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এমবি


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি